ঢাকায় শুরু হচ্ছে নারী বিশ্বকাপ কাবাডি’র ২য় আসর
- প্রকাশকাল ০৭:১৪:৩৬ পিএম, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৫ পাঠক
নারী কাবাডি বিশ্বকাপ
১১ দল নিয়ে ১৭ নভেম্বর থেকে ঢাকায় নারী শুরু হচ্ছে নারী কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর। শুরুতে ১৪ দল অংশ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে ১১টি দল। শেষ মুহুর্তে আর্জেন্টিনা নাম প্রত্যাহার করে নেয়।
বিশ্বকাপ আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরতে আজ শনিবার দুপুরে (১৫ নভেম্বর, ২০২৫) কাবাডি ফেডারেশনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম নেওয়াজ সোহাগ
নারী বিশ্বকাপের সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে। এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে ১১ দেশ। বাংলাদেশ, ভারত, চাইনিজ তাইপে, জার্মানি, ইরান, কেনিয়া, নেপাল, পোল্যান্ড, থাইল্যান্ড, উগান্ডা ও জাঞ্জিবার।
শুরুতে ১৪ দলের টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা ছিলো। নেদারল্যান্ডস, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া আগেই নাম প্রত্যাহার করে নেয়। শেষ মুহুর্তে সরে যায় আর্জেন্টিনাও। ফলে দল দাঁড়ায় ১০টি। স্ট্যান্ডবাই তালিকায় পোল্যান্ড যুক্ত হওয়ায় দল বেড়ে দাঁড়ায় ১১টিতে। আর পাকিস্তান প্রস্তুতি না থাকায় তারাও অংশ নিচ্ছে না।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আরও জানান, প্রতিযোগিতার বাজেট ধরা হয়েছে ১০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা।
প্রস্তুতি ও আয়োজন
বিশ্বকাপ সফল করতে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা, আবাসন, যাতায়াত ও ভেন্যু ব্যবস্থাপনাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রস্তুত। আয়োজনে সহযাত্রী হওয়ায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সরকারের অন্যান্য দপ্তর এবং পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন সংশ্লিষ্টরা বিশ্বাস করেন, এই আয়োজন নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ট্রফি উম্মোচন
রোববার ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান হবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনায়। নারী বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর অধিনায়কের উপস্থিতিতে হবে ট্রফি উন্মোচন।
বাংলাদেশের প্রত্যাশা
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, “নারীদের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে পঞ্চম স্থানে আছে। এই বিশ্বকাপ দিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করা সম্ভব, আমাদের সামনে সে সুযোগ রয়েছে। দলের কাছে আমাদের মূল প্রত্যাশাও এটি।”
তিনি আরও বলেন, “এই প্রথম বাংলাদেশ নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। আয়োজক হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা সফলভাবে আয়োজন সম্পন্ন করা। এখানে বিভিন্ন দেশের কোচ, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, রেফারিসহ আরও অনেকে আসবেন। আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারলে কাবাডি বিশ্বে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল হবে।”
অংশগ্রহণকারী দল প্রসঙ্গে
এস এম নেওয়াজ সোহাগ বলেছেন, “আর্জেন্টিনা শেষ মুহূর্তে আসবে না বলে আমাদের আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশন (আইকেএফ) থেকে জানানো হয়েছে। পাকিস্তানও আসেনি, কারণ তাদের দল ভালো অবস্থায় নেই। স্ট্যান্ডবাই থেকে পোল্যান্ড এসেছে। আন্তর্জাতিক কাবাডির সর্বোচ্চ সংস্থা আইকেএফের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সবকিছু পরিচালনা করছি।”
ম্যাচ পরিচালনা ও টেকনিক্যাল অফিসিয়াল
এ প্রসঙ্গে এস এম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, “খেলা পরিচালনার জন্য প্রতিটি দেশ থেকে রেফারি আনা হয়েছে। ভারত থেকে এসেছেন পাঁচজন রেফারি। বাংলাদেশের ১০ থেকে ১২ জনের একটি টেকনিক্যাল কমিটি আছে, যাতে রেফারিংয়ের মান আরও উন্নত হয় এবং এ নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে।”
বাংলাদেশ স্কোয়াড
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ নারী জাতীয় কাবাডি দল ঘোষণা করা হয়। দলের সদস্যরা হলেন— শ্রাবনী মল্লিক, বৃষ্টি বিশ্বাস, রূপালি আক্তার (সিনিয়র), স্মৃতি আক্তার, রেখা আক্তারী, মেবি চাকমা, রূপালি আক্তার, আঞ্জুয়ারা রাত্রি, সুচরিতা চাকমা, খাদিজা খাতুন, লোবা আক্তার, ইয়াসমিন খানম, ইসরাত জাহান সাদিকা ও তাহরিম।
স্ট্যান্ডবাই খেলোয়াড়:
আফরোজা ও লুম্বিনী চাকমা
কোচ: শাহনাজ পারভীন মালেকা ও আরদুজ্জামান মুন্সি
মেন্টর: বাদশা মিয়া
ম্যানেজার: আসাদুজ্জামান শাহীন
ফিটনেস কোচ: সুজিত
সব মিলিয়ে, বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল এবার বিশ্বকাপে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে প্রস্তুত। কঠোর পরিশ্রম ও নিবেদন দিয়ে তারা দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দেশবাসীর দোয়া ও সমর্থনই হতে পারে তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।



















